May 18 2025
আপনার সন্তানকে নিয়মিত বিদ্যালয়ে পাঠান । সন্তান শুধু স্কুলেই নয় ,বাসায়ও শেখে । আপনার ছোট সময়টুকু -তাদের জীবনে বড় পরিবর্তন আনতে পারে ।
১. পড়াশোনার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা
-
নির্দিষ্ট পড়ার জায়গা: বাড়িতে শিক্ষার্থীর পড়ার জন্য একটি শান্ত ও নির্দিষ্ট জায়গা তৈরি করে দিন, যেখানে সে মনোযোগ দিয়ে পড়তে পারে।
-
মনোযোগ নষ্টকারী জিনিস দূরে রাখা: পড়ার সময় টিভি, মোবাইল ফোন, বা অন্যান্য যা মনোযোগ নষ্ট করে, সেগুলো নাগালের বাইরে রাখুন।
-
রুটিন তৈরি ও অনুসরণ: প্রতিদিনের পড়াশোনা, খেলাধুলা ও ঘুমের জন্য একটি রুটিন তৈরি করতে সাহায্য করুন এবং তা মেনে চলতে উৎসাহিত করুন।
-
প্রয়োজনীয় উপকরণ গুছিয়ে রাখা: পড়ার জন্য প্রয়োজনীয় বই, খাতা, কলম ইত্যাদি হাতের কাছে গুছিয়ে রাখতে শেখান।
২. পড়াশোনায় সরাসরি সাহায্য করা
-
হোমওয়ার্ক তদারকি করা: প্রতিদিন সন্তানের হোমওয়ার্ক বা বাড়ির কাজ সম্পন্ন হয়েছে কি না, তার খোঁজ নিন।
-
বুঝতে সাহায্য করা, কিন্তু নিজে করে না দেওয়া: কোনো বিষয় বুঝতে সমস্যা হলে তাকে বুঝিয়ে দিন, কিন্তু তার কাজ নিজে করে দেবেন না। এতে তার শেখার আগ্রহ কমে যাবে এবং সে পরনির্ভরশীল হয়ে পড়বে।
-
পড়াশোনাকে আনন্দদায়ক করা: পড়াশোনার বিষয়গুলোকে বাস্তব জীবনের উদাহরণের সাথে মিলিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করুন, যাতে তার কাছে পড়াটা बोझ মনে না হয়।
-
নিয়মিত খোঁজখবর নেওয়া: প্রতিদিন স্কুল থেকে ফেরার পর সে কী কী শিখল, তা নিয়ে গল্প করুন। এতে তার আগ্রহ বাড়বে।
৩. স্কুল ও শিক্ষকের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপন
-
শিক্ষক-অভিভাবক সভায় যোগদান: স্কুলের সকল অভিভাবক সভায় অবশ্যই উপস্থিত থাকুন। এটি শিক্ষার্থীর অবস্থা জানার সেরা উপায়।
-
নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা: প্রয়োজনে শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ করে সন্তানের পড়াশোনার অগ্রগতি, আচরণ এবং সমস্যা সম্পর্কে জানুন ও আলোচনা করুন।
-
শিক্ষকদের সম্মান করা: সন্তানের সামনে তার শিক্ষকদের সম্মান দিয়ে কথা বলুন। এতে সন্তানের মনেও শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধা জন্মাবে।
৪. মানসিক ও भावनात्मक সমর্থন দেওয়া
-
অতিরিক্ত চাপ না দেওয়া: ভালো ফলাফলের জন্য অতিরিক্ত চাপ দেবেন না। প্রতিটি শিক্ষার্থীর শেখার ধরণ ও গতি ভিন্ন হয়।
-
উৎসাহ ও প্রশংসা করা: তার ছোট ছোট সাফল্যে প্রশংসা করুন এবং উৎসাহ দিন। এতে তার আত্মবিশ্বাস বাড়বে।
-
ব্যর্থতাকে মেনে নিতে শেখানো: পরীক্ষায় ফল খারাপ হলে বা কোনো কিছু না পারলে তাকে বকাঝকা না করে, পরবর্তী সময়ে আরও ভালো করার জন্য সাহস জোগান। ব্যর্থতাও যে শেখার একটি অংশ, তা তাকে বোঝান।
-
অন্যদের সাথে তুলনা না করা: আপনার সন্তানকে অন্য কোনো শিক্ষার্থীর সাথে তুলনা করবেন না। এই তুলনা তার আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয় এবং মনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
৫. স্বাস্থ্য ও সু-অভ্যাস গঠন
-
পর্যাপ্ত ঘুম: নিশ্চিত করুন যেন আপনার সন্তান প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুমায়। একজন শিক্ষার্থীর জন্য রাতের ভালো ঘুম অত্যন্ত জরুরি।
-
সুষম খাবার: তার জন্য পুষ্টিকর ও সুষম খাবারের ব্যবস্থা করুন। স্বাস্থ্যকর খাবার মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
-
খেলাধুলা ও ব্যায়াম: পড়াশোনার পাশাপাশি তাকে খেলাধুলা বা শারীরিক পরিশ্রম করতে উৎসাহিত করুন। এটি মানসিক চাপ কমায় এবং শরীর ও মনকে সতেজ রাখে।
-
স্ক্রিন টাইম নিয়ন্ত্রণ করা: মোবাইল, কম্পিউটার বা টেলিভিশনের স্ক্রিন টাইম নির্দিষ্ট করে দিন, যাতে পড়াশোনার ক্ষতি না হয়।
৬. নৈতিকতা ও দায়িত্ববোধ শেখানো
-
সময়ানুবর্তিতা: তাকে সময়ের মূল্য বুঝতে শেখান এবং সময়মতো সব কাজ করার অভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করুন।
-
দায়িত্ববোধ: তার বয়স অনুযায়ী ছোট ছোট কাজের দায়িত্ব দিন, যেমন নিজের পড়ার টেবিল গোছানো, নিজের স্কুলব্যাগ তৈরি করা ইত্যাদি।
-
সততা: তাকে সবসময় সত্যি কথা বলতে এবং সৎ থাকতে উৎসাহিত করুন।
সবশেষে মনে রাখবেন, আপনার ইতিবাচক ভূমিকা ও সমর্থনই আপনার সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। তাকে ভালোবাসুন, তার ওপর বিশ্বাস রাখুন এবং ধৈর্য ধরে তার পাশে থাকুন